সমুদ্র বন্দরের জন্য সংকেত গুলো জেনে নিন

Visits: 0

আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন সময়ে সমুদ্র বন্দরের জন্য সংকেত  জারি করা হয়। যখন কোন সামুদ্রিক ঝড়ের তৈরি হয় বা ঘূর্ণিঝড় বন্দর বা উপকূলের দিকে আসতে থাকে তখন সংকেতও পরিবর্তন হতে থাকে। এসব সংকেত মেনে চলা বন্দরে অবস্থান করা বা বন্দর হতে ছেড়ে যাওয়া নৌকা, লঞ্চ, জাহাজ এর জন্য অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় নৌযানগুলো হতে পারে দুর্যোগ কবলিত, ঘটতে পারে প্রাণহানি যা এড়ানো সম্ভব। তাই আসুন, জেনে নেয়া যাক সেসব সংকেত কখন কি বুঝায়।

১ নং দূরবর্তী সতর্ক সংকেত:

সমুদ্র হতে দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার কি.মি. বা কম। জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হতে পারে ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে।

২ নং দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত:

সমুদ্র হতে দূরবর্তী গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি.। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ সামুদ্রিক ঝড়ের / দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে।

৩ নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত:

সমুদ্র হতে নিকটবর্তী গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কি.মি. হতে পারে। ফলে বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

৪ নং স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত:

সমুদ্র হতে নিকটবর্তী গভীর সাগরে সৃষ্ট ঝড়ের জন্য বন্দর ঘূর্ণিঝড় কবলিত হতে পারে। বাতাসের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কি.মি.। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় এখনও আসেনি। বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

৫ নং বিপদ সংকেত:

বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি.। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৬ নং বিপদ সংকেত:

বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি.। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৭ নং বিপদ সংকেত:

বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি.। ঝড়টি বন্দরের উপর বা এর নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৮ নং মহা বিপদ সংকেত:

বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি. বা এর বেশিও হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

৯ নং মহা বিপদ সংকেত:

বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি. বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

১০ নং মহা বিপদ সংকেত:

বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি.বা তার বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরের উপর বা এর নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

১১ নং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত:

আবহাওয়ার বিপদ সংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সাথে স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর বা বন্দরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা এই পরিস্থিতিকে অতি বিপদজনক ও প্রচন্ড দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।

নদীবন্দরগুলো সমুদ্রবন্দরের সাথে সংযুক্ত থাকে। তবে নদী বন্দর ও সমুদ্র বন্দরের জন্য সতর্কতা সংকেত আলাদা আলাদা। তাই সতর্কতা সংকেত কত ও কার জন্য সেটা ভাল করে জেনে ও অনুধাবন করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ আছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের।